ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম ২০২৪

ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম ২০২৪

নতুন বা পুরাতন আইডি কার্ডের তথ্য কিংবা আইডি কার্ডের আবেদন ও সংশোধনের বর্তমান অবস্থা জানতে, ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম জেনে নিন এখানে।

নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন কিংবা অনলাইনে সংশোধন/ রিইস্যুর আবেদন করার পর ৭-১৫ কার্য দিবসের মধ্যে আইডি কার্ডের তথ্য সার্ভার আপলোড করা হয়। এ সময় আপনার আইডি কার্ডটি তৈরি হয়েছে কিনা তা চেক করার প্রয়োজন হয়। তাছাড়া ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করলে ও রি-ইস্যুর আবেদন, অনলাইন কপি ডাউনলোড করারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। 0

আপনার কাছে একটি ভোটার আইডি কার্ডের আইডি নাম্বার/ ভোটার নিবন্ধন নাম্বার/ ফরম নাম্বার কিংবা স্লিপ নাম্বার -এর যেকোনো একটি তথ্য থাকলে এবং সঠিক জন্ম তারিখ জানা থাকলেই অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন। NID card check করার প্রক্রিয়াটি ছবিসহ ধারাবাহিকভাবে জানতে পারবেন এই লেখা থেকে।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক

নতুন ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন করার পর আইডি কার্ড চেক করতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট- NIDW ভিজিট করুন। তারপর রেজিস্টার অপশনে ক্লিক করে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর/ ফর্ম নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট করুন। বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানায় তথ্য দিয়ে মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করুন। তারপর মোবাইলে NID Wallet এপ্স এর মাধ্যমে ফেস ভেরিফাই করে একটি পাসওয়ার্ড সেট করুন। এবার এনআইডি কার্ডের পার্সোনাল ড্যাশবোর্ড ওপেন হলে আইডি কার্ডের বিস্তারিত তথ্য চেক করতে পারবেন।

যারা নতুন ভোটার হয়েছেন/ ভোটার নিবন্ধন করেছেন কিন্তু আইডি কার্ড হাতে পাননি কিংবা ১০৫ নাম্বার থেকে এখনো মেসেজ আসেনি, তাদের এনআইডি কার্ডটি অনলাইনে চেক করতে হয়। তাছাড়া নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক করে আইডি কার্ডের বিস্তারিত তথ্য, বানান সঠিক কিনা, আইডি কার্ড ভ্যালিড কিনা তাও জানতে পারবেন এই নিয়মে। এই আলোচনায় NID card check করার সহজ পদ্ধতি গুলো তুলে ধরা হয়েছে। যেসকল মাধ্যমে আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন তার বিস্তারিত প্রক্রিয়াসহ নিচে জেনে নিতে পারবেন।

আরও পড়তে পারেনঃ নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২৪

ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম

অনলাইনে NIDW ওয়েবসাইট থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করতে হলে কার্ডধারী ব্যক্তিকে উপস্থিত থাকতে হয়। কিন্তু কার্ডধারী ব্যক্তি উপস্থিত না থাকলেও ভিন্ন উপায়ে আইডি কার্ড চেক করা যায়। বর্তমানে আইডি কার্ড চেক করার ৩ টি উপায় হলোঃ

  • ভূমি মন্ত্রণালয়ে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে।
  • বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের Nidw ওয়েবসাইট থেকে।
  • ১০৫ নাম্বারে SMS এর মাধ্যমে।

নিচে এ সকল পদ্ধতিতে NID check করার বিস্তারিত প্রক্রিয়া আলোচনা করা হলো।

অনলাইনে এন আইডি কার্ড চেক | NID Card Check Online

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার প্রক্রিয়াটি ছবিসহ ধারাবাহিকভাবে নিচে তুলে ধরা হলো:

ধাপ ১: NIDW ওয়েবসাইটে রেজিস্টার

সর্বপ্রথম, https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ – এই লিংকে ক্লিক করে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে যান। তারপর মূল পেইজ থেকে ‘রেজিস্টার করুন’ বাটনে ক্লিক করুন। এবার নিচের ছবির মতো একটি ওয়েব পেজ আসবে। এখানে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর/ ফরম নাম্বার ও জন্ম তারিখ লিখুন। সর্বশেষে, নিচের ঘরে ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট করুন।

ভোটার আইডি কার্ড চেক

ধাপ ২: আইডি কার্ডের ঠিকানা যাচাই

আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য অনুযায়ী বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানার তথ্য দিন। এখানে বিভাগ জেলা ও উপজেলা নির্বাচন করতে হবে।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক

ধাপ ৩: মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করুন

NID card check করার জন্য যেকোন একটি মোবাইল নাম্বার দিন। তারপর বহাল বাটনে ক্লিক করলে একটি ওটিপি কোড আসবে। এই কোডটি ওয়েব পেজে লিখে পরবর্তী ধাপে যান।

এনআইডি কার্ড চেক-মোবাইল ভেরিফিকেশন

ধাপ ৪: ফেস ভেরিফিকেশন করুন

ভোটার আইডি কার্ড ধারীর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটার আইডি কার্ড চেক কিংবা ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে ফেস ভেরিফিকেশনের নীতিমালা আরোপ করা হয়েছে। 

এক্ষেত্রে মোবাইলে NID wallet অ্যাপ্স ডাউনলোড করে নিচের ছবিতে দেওয়া QR কোড স্ক্যান করুন এবং মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে ফেস ভেরিফাই করুন।

ভোটার আইডি কার্ড চেক - ফেস ভেরিফিকেশন

ধাপ ৫: NIDW একাউন্টের পাসওয়ার্ড সেট করুন

এই ধাপে, আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং পরবর্তীতে সহজে সাইন ইন করতে একটি পাসওয়ার্ড সেট করে রাখুন।

আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম

ধাপ ৬: ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চেক

এবার আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্য অনুযায়ী একটি পার্সোনাল ড্যাশবোর্ড ওপেন হবে। এই ড্যাশবোর্ড থেকে উপরের প্রোফাইল অপশনে ক্লিক করে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের বিস্তারিত তথ্য চেক (NID check) করতে পারবেন।

অনলাইনে আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই

আপনি চাইলে এখান থেকে ডাউনলোড অপশন ক্লিক করে আপনার আইডি কার্ডের পিডিএফ অনলাইন কপিটি ডাউনলোডও করতে পারবেন।

নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড চেক

উপরোক্ত পদ্ধতিতে ভোটার আইডি কার্ডের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার/ ফরম নাম্বার/ নতুন ভোটার আইডি কার্ডের স্লিপ নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চেক করতে পারবেন। তবে এর জন্য অবশ্যই ভোটার আইডি কার্ডে দেওয়ার জন্ম তারিখ প্রয়োজন হবে।

পুরাতন আইডি কার্ড চেক অনলাইন

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের বিস্তারিত তথ্য চেক করতে NIDW ওয়েবসাইটে ভিজিট করে রেজিস্টার অপশনে যান। তারপর ধারাবাহিকভাবে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

  • ভোটার আইডি নম্বর ও জন্ম তারিখ দিন।
  • স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানার তথ্য দিন।
  • মোবাইল নাম্বারে OTP ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন।
  • মোবাইলে NID Wallet অ্যাপস ডাউনলোড করুন। অ্যাপস ওপেন করে ওয়েবপেইজে আসা QR Code স্ক্যান করে ফেইস ভেরিফিকেশন করুন।
  • সেট পাসওয়ার্ড বাটনে ক্লিক করে একটি নতুন পাসওয়ার্ড ও কনফার্ম পাসওয়ার্ড দিন।
  • এবার একটি ব্যক্তিগত ড্যাশবোর্ড ওপেন হবে। 
  • প্রোফাইল অপশনের বিস্তারিত তথ্য পেজ থেকে পুরাতন ও নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন।

আপনার প্রয়োজনে এখান থেকে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে নতুন আইডি কার্ডের PDF কপি ডাউনলোড করতে পারেন।

আরও পড়তে পারেনঃ স্মার্ট এনআইডি কার্ড স্ট্যাটাস চেক ২০২৪

ভূমিকর ওয়েবসাইট থেকে নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক

ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ভূমিকর ওয়েবসাইট থেকে আইডি কার্ড চেক করা যায়। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয় পত্রের ছবি, নাম, ঠিকানাসহ সাধারণ কিছু তথ্য চেক করা যায়।

নতুন ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার কিছুদিন পর, ১০৫ নাম্বার থেকে SMS এর মাধ্যমে এনআইডি কার্ডের নাম্বার জানানো হয়। সেই আইডি নাম্বার, জন্ম তারিখ ও মোবাইল নাম্বার থাকলেই ভূমিকর ওয়েবসাইট থেকে এনআইডি কার্ড চেক করা যায়।

ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চেক করতে ভিজিট করুন https://ldtax.gov.bd/citizen/register এই লিংকে। এবার নিচের ধাপগুলো ধারাবাহিকভাবে অনুসরণ করুনঃ

  • ওয়েবসাইটের মূল ইন্টারফেস থেকে নাগরিক কর্নার অপশনে ক্লিক করুন।
  • নাগরিক নিবন্ধন অপশনে ক্লিক করুন।
  • মোবাইল নাম্বারে OTP Verify করে পাসওয়ার্ড দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করুন। মোবাইল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে পুনরায় লগইন করুন।

এবার ড্যাশবোর্ড থেকে এনআইডি কার্ড ভেরিফাই অপশনে ক্লিক করুন। আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার ও জন্ম তারিখ লিখে যাচাই করুন। জাতীয় পরিচয় পত্রের ব্যক্তির নাম ও তার পিতা মাতার নাম এবং জন্ম তারিখ ইত্যাদি তথ্য চলে আসবে।

SMS এর মাধ্যমে নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক

যেকোনো মোবাইল নাম্বার থেকে, নির্বাচন কমিশনের তথ্য সম্পর্কিত নাম্বার – ১০৫ নাম্বারে SMS এর মাধ্যমে এনআইডি কার্ড চেক করা যায়। 

এসএমএসের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চেক করতে-

  • প্রথমে, আপনার মোবাইল থেকে মেসেজ অপশনে যান। 
  • এবার টাইপ করুন NID তারপর স্পেস দিয়ে ফরম নম্বর/ NID Number লিখুন, 
  • পুনরায় স্পেস দিয়ে জন্ম তারিখ লিখুন, DD-MM-YYYY এই ফরমেটে। (মেসেজ লেখার নিয়ম: NID <Space> Form number/ NID number <Space> DD-MM-YYYY. উদাহরণঃ NID 1234567890 08-12-1999)
  • এবার পাঠিয়ে দিন ১০৫ (105) নাম্বারে।

রিপ্লাই মেসেজে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য দেখতে পাবেন। এক্ষেত্রে সাধারণত প্রাথমিক কিছু তথ্য ও এনআইডি নাম্বার জানা যায়। তবে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের বিস্তারিত তথ্য জানা অথবা ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করা যায় না। সেক্ষেত্রে NIDW ওয়েবসাইট থেকে ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করতে পারেন।

প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চেক

বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, ব্যাংক, বীমা কোম্পানি বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ভিন্ন পদ্ধতিতে জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাই করে থাকে। জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য যাচাইয়ের জন্য, নির্বাচন কমিশন থেকে NID Verification সফটওয়্যার সরবরাহ করা হয়। 

এই সফটওয়্যার ব্যবহার করার জন্য porichoy.gov.bd সাইট থেকে আবেদন করে ও নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে প্যাকেজ কিনতে হয়। তবে সাধারণ নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করতে NIDW ওয়েবসাইট সবচেয়ে উপযুক্ত।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ভোটার আইডি কার্ড চেক

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে দেশের প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিকদের জাতীয় পরিচয় পত্র দেওয়া হয়। এ সকল পরিচয় পত্রের যাবতীয় তথ্যাবলী নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট/ সার্ভারে আপলোড করা থাকে। পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে সেই আইডি কার্ডটির সত্যতা যাচাই করা যায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে। এছাড়াও আইডি কার্ডের যাবতীয় সকল সেবা সমূহ এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নাগরিকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়।

শেষকথা 

ভোটার আইডি কার্ড প্রতিটি বাংলাদেশি নাগরিকের জন্যই একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট। জরুরী প্রয়োজনে নতুন ভোটার হতে আবেদন করলে কিংবা সংশোধনের আবেদন করলে, আবেদনের বর্তমান অবস্থা জানার গুরুত্ব রয়েছে। তাই উপরোক্তভাবে আপনি ঘরে বসেই ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন খুব সহজেই।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *